চট্টগ্রাম বাঁশখালীতে গন্ডামারা ইউনিয়নের বড়ঘোনা গ্রামে ওয়াহেদ আলী বাড়ির নবাব আলী (৬০) পিতা মৃত ছাবের আহমদ, মো. দিদার (৪০) এবাদুল হক (২৮) মহিউদ্দিন (২২) পিতা নবাব আলীর বিরুদ্ধে তালেব আলী (৫৫) পিতা মৃত ছাবের আহমদ বাদী হয়ে গত ২৮ ডিসেম্বর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত বাঁশখালী চট্রগ্রাম বরাবর (৩২৩,৩৭৯,৩৮৫ ও ৫০৬ দণ্ডবিধি) মামলা দায়ের করেন। তবে এ মামলার সাক্ষী নিজেই জানেন না, কেন সে সাক্ষী!
মামলার নালিশী দরখাস্তে উল্লেখ করেন যে, গত ২৫ ডিসেম্বর শুক্রবার সকাল আনুমানিক ৯টায় তপশীলোক্ত জমিতে আসামিগণ বাদী পক্ষ হতে এক লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেন এবং বাদীর পকেটে থাকা ৬০,০০০/- ছিনতাই করে।
উক্ত মামলায় অভিযুক্ত আসামিগণ বলেন, ঘটনার দিন এবাদুল হক (২৮) ও মোহাম্মদ দিদার মহিউদ্দিন, চট্টগ্রাম শহরে অবস্থান করে এবং সি সি টিভির ফুটেজও আছে। আমার বিরুদ্ধে এটি একটি সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট মামলা।
সত্যতা যাচাইয়ে সি সি ক্যামেরায় ধারণকৃত গত ২৪ ডিসেম্বর থেকে ৩০ ডিসেম্বরের ভিডিওতে দেখা যায় নালিশী দরখাস্তে উল্লেখিত সময়ে এবাদুল হক নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে (মুদির দোকান) ক্যাশে বসে টাকা আদান প্রধান করেছেন এবং মুদির জিনিসপত্র বিক্রি করছে। অপর জন একটি আবাসিক ভবনে নিরাপত্তা কর্মী হিসেবে দায়িত্বে আছেন।
সরেজমিনে উক্ত মামলার তিন নং সাক্ষী আবদুল মান্নানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, গত ২৫ ডিসেম্বর আমি ভোর থেকে বাড়িতে ছিলাম এবং ঐদিন কোন ঘটনা হয়নি আমি নিশ্চিত এবং দায়েরকৃত মামলায় আমাকে যে সাক্ষী করা হয়েছে তা আমি নিজেও জানি না। অপরদিকে দুই নং সাক্ষী ছলিম উল্লাহ ও এলাকাবাসি বলেন শুক্রবার হিসেবে আমরা বাড়িতে ছিলাম, ওইদিন কোন ঘটনা হয়নি, এটি একটি মিথ্যা মামলা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রত্যক্ষদর্শী একজন বলেন, এখানে চাঁদাবাজি হবে তো দূরের কথা গত এক মাসে কোন ঘটনাই ঘটে নাই। যদি ও চাঁদাবাজি কিংবা জখম হলে বাদী পক্ষ আদালতে তা প্রমাণ করবে।
উক্ত অভিযোগের ভিত্তিতে মামলার বাদী তালেব আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘটনা হয়েছে কি হয়নি তা আমি জানি, আপনার জানার দরকার কি? মামলা কেন করেছি তাও আমি জানি আপনাদের বলার দরকার নেই। থানা থেকে পুলিশ আসলে তাদেরকে বলবো। অন্যদিকে বাদীর সাথে কথা বলার সময় মামলার ৪নং সাক্ষী ও বাদীর মেয়ে কুনছুমা বেগম অকথ্য ভাষায় গালাগালি ও গণমাধ্যমকর্মী উপস্থিতি টের পেয়ে আরও বেশি গালিগালাজ করেন।
এ ব্যাপারে সাবেক এক ইউপি সদস্য বলেন, আমি মেম্বার থাকাকালীন সময়ে এই জায়গা জমির বিরোধ নিষ্পত্তি করে দিয়েছিলাম, তবে নতুন করে এখানে চাঁদাবাজি হয়েছে কিনা, কাউকে মেরে জখম করেছে কিনা সেটা আমি জানি না। উক্ত ঘটনায় আসামিরা ঘটনার তারিখে উপস্থিত ছিল না এটা জানি।
উক্ত ঘটনায় এলাকাবাসি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দিনদুপুরে এভাবে যদি মিথ্যা মামলা দেওয়া হয় আমরা নিরীহ মানুষ কোথায় যাব। আমরা সবাই আতঙ্কে আছি। উক্ত মামলার তদন্ত পূর্বক সুষ্ঠু বিচার করে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা ব্যক্তিকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি কামনা করছি।
বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ কামাল উদ্দিন মুঠোফোনে বলেন, বাঁশখালীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা হয়েছে এটা তদন্ত করার জন্য বাঁশখালী থানাকে দেওয়া হয়েছে, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ তদন্ত করে আদালতের রিপোর্ট প্রদান করা হবে।
এসসি