ভরা মৌসুমেও ‘ইলিশ মোকাম’ হিসেবে পরিচিত আনোয়ারা বঙ্গোপসাগর উপকূলের রায়পুরের সরেঙ্গা, পূর্ব গহিরা, বাতিঘর, ধলঘাট, বার আউলিয়া, উঠান মাঝির ঘাট, দোভাষী ঘাট ও ছিপাতলী ঘাট, জুঁইদণ্ডী সাপমারা খালের মুখ এবং বারশতের পারকি বাজারসহ ১২টির অধিক ঘাটের মিলছে না ইলিশ।
তবে এখন মৌসুম শেষে সুদিন ফিরেছে আনোয়ারার জেলেদের। জাল ফেললেই উঠে আসছে রুপালি শস্য—ইলিশ। এক সপ্তাহ ধরে আনোয়ারা উপকূলজুড়ে যেন ইলিশ ধরার উৎসব চলছে। জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ায় খুশি জেলেরা। পাইকার, আড়তদার ও জেলেদের হাঁকডাকে এখন মুখরিত আনোয়ারা উপকূলের মাছঘাট।
সরেজমিনে দেখা যায়, মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের উঠান মাঝির ঘাটের চিত্র পাল্টে গেছে । সাগরে ছুটছেন জেলেরা, পর্যাপ্ত ইলিশ ধরা পড়ায় হাসি ফুটেছে জেলে পরিবারে।
ধলঘাট এলাকার মাঝি রহমত মিয়া বলেন, ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে জেলেরা সাগরে মাছ শিকারে করতে বঙ্গোপসাগর যাওয়া প্রস্তুতির সময়ে সৃষ্টি হয়েছিলো সৃষ্ট লঘুচাপ। এছাড়া ইলিশ মৌসুমের শুরুতে সাগরে মাছ পাইনি। দু তিন দিন মিলে গভীর সাগরে গিয়ে চাহিদা মতো মাছ পাওয়া যেতনা । তখন খুব খারাপ অবস্থা ছিল। এখন বঙ্গোপসাগর মোটামুটি মাছ পাওয়া যাচ্ছে । দামও ভালো। এভাবে মাছ পাওয়া গেলে আগের ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারব।
গহিরা উঠান মাঝির ঘাট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোঃ নাছির জানান, সেই হিসাবে এবার ইলিশের উৎপাদন আরও বৃদ্ধি পাওয়ার কথা। তবে বাস্তব চিত্র একেবারে ভিন্ন। ট্রলারে মধ্যসাগরে যে মাছ পাওয়া যাচ্ছে তা দিয়ে জালানি এবং অন্যান্য খরচ তুলতেই কষ্ট হচ্ছে ট্রলার মালিকদের। তবে এখন মৌসুম শেষে সুদিন ফিরেছে।
তিনি আরও বলেন, সরকার মা ইলিশ রক্ষায় যে সময় অভিযান দেয় তা থেকে আরও ১০ দিন পিছিয়ে দিলে প্রান্তিক জেলে ও আড়তদাররা পেছনের ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারবে।
আনোয়ারা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা রাশিদুল হক বলেন, সাগরে পর্যাপ্ত ইলিশ রয়েছে, তবে যেহেতু এ বছরের শুরুতে টানা সাত মাস বৃষ্টি হয়নি, সে কারণে ইলিশ গভীর সাগর থেকে এখনো তীরে ফেরেনি। পানির লবণাক্ততা কমলে এবং বৃষ্টিপাত বাড়লে খুব কাছাকাছি সময়ের মধ্যে জেলেদের জালে ইলিশ ধরা পড়বে।
এমকে