করোনা মহামারির কারণে টানা ১৭ মাস ২৬ দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পর রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সারাদেশের ন্যায় মিরসরাইয়ের সব স্কুল-কলেজ খুলে দেয়া হয়েছে। এ কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে চলেছে উৎসবের আমেজ। ইউনিফর্ম গায়ে দিয়ে কাঁধে বই-খাতার ব্যাগ ঝুলিয়ে সারি সারি শিক্ষার্থীরা আবারো ফিরেছে তাদের প্রিয় ক্যাম্পাসে। শিক্ষার্থীদের কলরবে মুখরিত হয়ে উঠেছে প্রিয় শিক্ষাপ্রাঙ্গন।
করোনার ভয়াল থাবার মধ্যেই চিরচেনা রূপে ফিরেছে স্কুল ও কলেজগুলো। প্রিয় ক্যাম্পাসে ফিরতে পেরে খুশি শিক্ষার্থীরা। প্রিয় শিক্ষক, বন্ধু-সহপাঠীদের পেয়ে কিছুতেই থামছে না আনন্দের উচ্ছাস। অনেক শিক্ষার্থী আছে যারা নতুন ভর্তি হয়েছে, তাদের জন্য আজই হয়েছে ক্লাসের প্রথম দিন।
এই বিষয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে এই প্রতিবেদক জানতে চাইলে উপজেলার আল-হেরা স্কুল এন্ড কলেজের ১০ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, দীর্ঘদিন পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ায় আমরা খুবই আনন্দিত। আমাদের খুবই ভালো লাগছে।
উপজেলার নিজামপুর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী নয়ন মাহমুদ জানান, দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অনেক শিক্ষার্থী মানসিক বিপর্যয়ের শিকার হচ্ছিলো। কিন্তু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ায় এখন সেই চিরচেনা রূপ দেখে আমরা সবাই অনেক আনন্দিত।
আবুতোরাব ফাযিল মাদরাসার শিক্ষার্থী সানজিদা আক্তার জানান, করোনা ভাইরাসের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় আমাদের পড়ালেখায় বিরূপ প্রভাব পড়েছে। কিন্তু স্কুল—কলেজ খুলে দেয়ায় আমরা আবারও আমাদের লেখাপড়ায় মনোযোগ দিতে পারবো। এতে আমরা খুবই উচ্ছ্বাসিত।
নিজামপুর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ মেজর মোহাম্মদ রফিক উদ্দিন সিটিজি নিউজকে জানান, দীর্ঘ বন্ধের পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করেছিলো। আমরা শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি এবং সরকারি নির্দেশনা মান্য করে ক্লাস নিয়েছি। আশা করি প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় আমাদের শিক্ষার্থীদের যে ঘাটতি হয়েছে তা শীঘ্রই কাটিয়ে উঠতে পারবো।
মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিনহাজুর রহমান বলেন, আমি গত দুই দিনে অনেক গুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেছি। এতে প্রতিষ্ঠানের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছে এবং যাতে করে শিক্ষার্থীদের কোন প্রকার ক্লাস করতে সমস্যা না হয় সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম রহমান সিটিজি নিউজকে জানান, আমি আজকে অনেক গুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেছি। প্রত্যেকটা প্রতিষ্ঠানে আজকে উৎসব মুখর পরিবেশ ছিলো। শিক্ষার্থীরা আনন্দের সাথে ক্লাসে অংশ গ্রহণ করেছে। উপজেলার প্রায় সব প্রতিষ্ঠান শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি এবং সরকারি নির্দেশনা মেনে ক্লাস চলেছে।
উল্লেখ্য, দেশে করোনা শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ই মার্চ। করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে সে বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়। এসময় শ্রেণিকক্ষে পাঠদান বন্ধ থাকলেও অনলাইনে ক্লাস চালু করা হয়েছিল।
এমজে/